আগেই বলে আমি এতটা ভাল লিখতে পারিনা। এই লেখাটিও আমার নয়। প্রথম আলোর
আজকের একটা রিপোর্ট দেখে বিভিন্ন ওয়েব সাইট ঘেটে এই টিউনটি করেছি। অনেক
ব্লগেই এই বিষয়ে লেখা পেয়েছি। তাই শেয়ার করলাম। সংগৃহীত।
বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে জামদানি শাড়ির পর ফজলি আমের স্বত্বও আদায় করে নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ । এর আগে নিমগাছের স্বত্ব নিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্য দেশের স্বত্ব নেওয়া পণ্যগুলো ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন এবং আমদানি-রপ্তানি করতে গেলে স্বত্ব পাওয়া দেশকে রয়্যালটি দিতে হবে। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এসব পণ্য স্বত্ব পাওয়া দেশগুলোর নিজস্ব বলেই বিবেচিত হবে।
একই ভাবে নকশি কাথারও পেটেন্ট ভারতের।
ভারত এপ্রিল ২০০৪ থেকে এপ্রিল ২০০৯ পর্যন্ত ১১৭টি পণ্যকে নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য দরখাস্ত করেছে। এর ভেতর বাংলাদেশের অনন্য ভৌগোলিক নির্দেশনা নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়ি ও ফজলি আমও রয়েছে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উপ্পাদা কোথাপল্লি মণ্ডলের বেশ কিছু গ্রামের তাঁতিসমাজ, দুটি নিবন্ধিত তাঁতিদের সংগঠন ২০০৯ সালে ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামের জামদানি শাড়িকে তাদের নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত করেছে। পাশাপাশি নকশিকাঁথাকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনগুলো নকশিকাঁথাকে নিজেদের নিজস্ব পণ্য হিসেবে আইনগত নিবন্ধনের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।ভারত উপ্পাদা জামদানির উৎপত্তিস্থল অন্ধ্র প্রদেশে, নকশি কাঁথার উৎপত্তিস্থল পশ্চিম বঙ্গে এবং ফজলি আমের উৎপত্তিস্থল পশ্চিম বঙ্গের মালদা জেলা হিসেবে নিবন্ধন করিয়েছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অসম বাণিজ্য চুক্তির ছুতোয় বাসমতী চাল, আলফন্সো আম এবং স্কচ হুইস্কির বাণিজ্যিক মালিকানা নিয়ে বিশ্বব্যাপী দেনদরবার শুরু হলে পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশনার প্রসঙ্গখানি বাণিজ্য-দুনিয়ায় আরেক ঝামেলা নিয়ে হাজির হয়। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২৩টি অসম ও অন্যায্য চুক্তিতেই বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে, যার একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস’। এই ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারায় দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। আবার ২২ ও ২৩ ধারায় ভৌগোলিকভাবে নির্দেশিত পণ্যের জন্য কিছু আইনগত স্বীকৃতির কথাও বলা হয়েছে। ট্রিপস চুক্তির ধারা মেনেই ভারত নিজস্ব ‘সুই-জেনেরিস’ আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্যকে নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশনা হিসেবে নিবন্ধিত করছে।
নকশিকাঁথা এখনো বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীন একে নাগরিক জীবন এবং পরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছিলেন তাঁর ১৯২৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ নক্সী কাঁথার মাঠ দিয়ে। আর দেশে রাজশাহীর ফজলি আমের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার কথা বলাই বাহুল্য। (সূত্রঃ প্রথম আলো)
নবম শতাব্দীতে আরব ভূগোলবিদ সোলায়মান তার গ্রন্থ স্রিল সিলাই-উত-তওয়ারিখে রুমি নামের রাজ্যে সূক্ষ্ম সুতি কাপড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার বর্ণনা অনুসারে বোঝা যায়, রুমি রাজ্যটি আসলে বর্তমানের বাংলাদেশ। চতুর্দশ শতাব্দীতে বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা বাংলাদেশ পরিভ্রমণ করেন এবং সোনারগাঁও এলাকাস্থিত সুতিবস্ত্রের প্রশংসা করেছেন। যোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে ইংরেজ পর্যটক র্যালফ ফিচ ও ঐতিহাসিক আবুল ফজলও ঢাকার মসলিনের প্রশংসা করেছেন।আরেক ঐতিহাসিক টেলরের জামদানির বর্ণনা দিয়েছেন। তার বর্ণনানুসারে সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১০*২ হাত মাপের ও ৫ শিক্কা ওজনের একটুকরা আব-ই-রওয়ান এর দাম ছিল ৪০০ টাকা। সম্রাট আওরঙ্গজেবের জন্য তৈরি জামদানির দাম ছিল ২৫০ টাকা। ১৭৭৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের জামদানির মূল্য ছিল ৪৫০ টাকা। (সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
...
গ্রামবাংলার ধান, নকশিকাঁথা, কাসুন্দি, আচার, ভেষজ ও পিঠা, পাবনা শাড়ি, হাওরের নানিদ মাছ, চান্দারবিলের কৈ, ঢাকাই জামদানি, বাবুরহাটের তাঁত, পার্বত্য চট্টগ্রামের বেইন তাঁতে বোনা কাপড়, বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈ মণিপুরি শাড়ি ও চাদর, রংপুরের শতরঞ্জি, মিরপুর কাতান, বাংলার কালো ছাগল, চট্টগ্রামের লবণ, মুন্সিগঞ্জের কলা, ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যপুরী আম, যশোরের খেজুর গুড়, দিনাজপুরের কালিজিরা ধান, কালিয়াকৈরের ধনীর চিড়া, হাওর অঞ্চলের ধামাইল গান, উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গীত, দক্ষিণাঞ্চলের গাজীর গান, ঝিনাইদহের হরি ও ম্যানেজার ধান, সুন্দরবনের মধু, টাঙ্গাইল শাড়ি, বগুড়ার দই, সিলেটের সাতকরা, পদ্মার ইলিশ, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, মধুপুরের আনারস, মুক্তাগাছার মন্ডা, শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পান ও চা, পোড়াবাড়ীর চমচম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বান্দরবানের বম চাদর, কুমিল্লার খাদি, রুহিতপুরী লুঙ্গি, যশোরের জামতলার রসগোল্লা, পটুয়াখালীর নাপ্পি, কুলিয়ারচরের সিদল শুঁটকি—এ রকম অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যই চলমান রেখেছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্ব। দুনিয়ার সব ভূগোলে, সব যাপিত জীবনেই এ রকম বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক নির্দেশনা আছে।
ভবিষ্যতে হয়তো আমাদের রূপালী ইলিশ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার এগুলোর পেটেন্ট ও নিয়ে যাবে।
২। https://www.facebook.com/digitcharaTAL/posts/423385497698106 (
লাগবো না তোর ডিজিটাল বাংলাদেশ, ফেরত দে আমার এনালগ বাংলাদেশ)
৩। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-14/news/297713 (প্রথম আলো)
৪। http://www.somewhereinblog.net/blog/SBhai/29683985 (সামহোয়ার ইন ব্লগ)
৫। উইকিপিডিয়া
I hope so that you will be comment about this topics.
মূল খবরঃ
_______________________________________________________________
কঠোর গোপনীয়তা এর মাধ্যমে জামদানি শাড়ী সহ গ্রাম বাংলার আর ৬৬ টি ঐতিহ্য এর পেটেন্ট নিয়ে যাচ্ছে ভারত। এবং তাতে সফল হলে ভবিষ্যতে ভারতের ঐতিহ্য হিসাবে জামদানি পৃথিবীতে পরিচিত হবে। এবং বাংলাদেশকে জামদানি উৎপাদনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে ।বর্তমানে কোথাপল্লী অঞ্চলের প্রায় ৪০০ পরিবার জামদানি শাড়ি বুননের সঙ্গে জড়িত, যাদের শাড়ি প্রায় ১০৮টি দেশে রপ্তানি হয়। জামদানি শাড়ির ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের এ নিবন্ধন কার্যকর করার ভেতর দিয়ে জামদানি শাড়ি-বাণিজ্যের মাধ্যমে ভারত বছরে প্রায় ছয়শ কোটি ভারতীয় রুপি রাজস্ব আয় করতে সমর্থ হবে।।বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে জামদানি শাড়ির পর ফজলি আমের স্বত্বও আদায় করে নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ । এর আগে নিমগাছের স্বত্ব নিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্য দেশের স্বত্ব নেওয়া পণ্যগুলো ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন এবং আমদানি-রপ্তানি করতে গেলে স্বত্ব পাওয়া দেশকে রয়্যালটি দিতে হবে। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এসব পণ্য স্বত্ব পাওয়া দেশগুলোর নিজস্ব বলেই বিবেচিত হবে।
একই ভাবে নকশি কাথারও পেটেন্ট ভারতের।
ভারত এপ্রিল ২০০৪ থেকে এপ্রিল ২০০৯ পর্যন্ত ১১৭টি পণ্যকে নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য দরখাস্ত করেছে। এর ভেতর বাংলাদেশের অনন্য ভৌগোলিক নির্দেশনা নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়ি ও ফজলি আমও রয়েছে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উপ্পাদা কোথাপল্লি মণ্ডলের বেশ কিছু গ্রামের তাঁতিসমাজ, দুটি নিবন্ধিত তাঁতিদের সংগঠন ২০০৯ সালে ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামের জামদানি শাড়িকে তাদের নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত করেছে। পাশাপাশি নকশিকাঁথাকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনগুলো নকশিকাঁথাকে নিজেদের নিজস্ব পণ্য হিসেবে আইনগত নিবন্ধনের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।ভারত উপ্পাদা জামদানির উৎপত্তিস্থল অন্ধ্র প্রদেশে, নকশি কাঁথার উৎপত্তিস্থল পশ্চিম বঙ্গে এবং ফজলি আমের উৎপত্তিস্থল পশ্চিম বঙ্গের মালদা জেলা হিসেবে নিবন্ধন করিয়েছে।
মেধাস্বত্ব আইনঃ
________________________________________________________________
সৃজন ও মননশীল শিল্পের মেধাস্বত্ব অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সনদের সমর্থক বাংলাদেশ ও ভারত উভয় রাষ্ট্রই। উভয় রাষ্ট্রই জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য সনদ (সিবিডি ১৯৯২) স্বাক্ষর ও অনুমোদন করেছে, যেখানে প্রাণসম্পদসহ লোকায়ত জ্ঞান সুরক্ষার অধিকারের প্রসঙ্গটি জোরালোভাবেই আছে। হলুদ ও বাসমতী চালের পেটেন্ট নিয়ে আন্তর্জাতিক বিতর্কের একপর্যায়ে ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ১৯৯৯ সালে দেশের লোকায়ত জ্ঞান সুরক্ষার জন্য ট্র্যাডিশনাল নলেজ ডিজিটাল লাইব্রেরি (টিকেডিএল) তৈরি করে। বাংলাদেশেও পেটেন্টস অ্যান্ড ডিজাইনস অ্যাক্ট, ১৯১১; পেটেন্টস অ্যান্ড ডিজাইনস রুল, ১৯৩৩; ট্রেডমার্কস অ্যাক্ট, ১৯৪০; ট্রেডমার্কস রুলস, ১৯৬৩ কার্যকর আছে। পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন কপিরাইট (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০০৫ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের জন্য ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সংরক্ষণ) অধ্যাদেশ, ২০০৮’ নামের একটি খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করেছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ন্ত্রণ ও বাণিজ্য বিষয়ে বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, এ সম্পর্কে মতামত দিয়ে খসড়াটি তৈরিতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করেছে। অধ্যাদেশটিতে শিল্প মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের তিনটি মৎস্য পণ্য, ১২টি ফল, ১১টি প্রক্রিয়াজাত খাবার, আটটি শাকসবজি, ১৪টি কৃষিজাত পণ্যসহ মোট ৪৮টি খাদ্যপণ্য এবং খাদ্য বাদে ১৮টি পণ্য মিলিয়ে ৬৬টি পণ্যকে বাংলাদেশের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। খসড়া তালিকাটিতে জামদানি শাড়ি, ফজলি আম এবং নকশিকাঁথাকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবেই দেখানো হয়েছে।বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অসম বাণিজ্য চুক্তির ছুতোয় বাসমতী চাল, আলফন্সো আম এবং স্কচ হুইস্কির বাণিজ্যিক মালিকানা নিয়ে বিশ্বব্যাপী দেনদরবার শুরু হলে পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশনার প্রসঙ্গখানি বাণিজ্য-দুনিয়ায় আরেক ঝামেলা নিয়ে হাজির হয়। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২৩টি অসম ও অন্যায্য চুক্তিতেই বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে, যার একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস’। এই ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারায় দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। আবার ২২ ও ২৩ ধারায় ভৌগোলিকভাবে নির্দেশিত পণ্যের জন্য কিছু আইনগত স্বীকৃতির কথাও বলা হয়েছে। ট্রিপস চুক্তির ধারা মেনেই ভারত নিজস্ব ‘সুই-জেনেরিস’ আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্যকে নিজস্ব ভৌগোলিক নির্দেশনা হিসেবে নিবন্ধিত করছে।
তিন ঐতিহ্যের ইতিকথা:
________________________________________________________________
প্রাচীনকালেই বাংলার সূক্ষ্ম বস্ত্রের খ্যাতি ছিল। জামদানির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে। ঢাকা অঞ্চলকে ঘিরে জামদানি তাঁতের প্রচলন এবং প্রসার ঘটে। আজ বাংলার এই প্রাচীন শিল্পের মালিকানা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের তাঁতিরা এবং দুটি নিবন্ধিত তাঁতি সংগঠন ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামে জামদানি শাড়ির নিবন্ধন করিয়েছে।নকশিকাঁথা এখনো বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীন একে নাগরিক জীবন এবং পরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছিলেন তাঁর ১৯২৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ নক্সী কাঁথার মাঠ দিয়ে। আর দেশে রাজশাহীর ফজলি আমের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার কথা বলাই বাহুল্য। (সূত্রঃ প্রথম আলো)
ইতিহাস কী বলেঃ
________________________________________________________________
জামদানির প্রাচীনতম উল্লেখ পাওয়া যায়, আনুমানিক ৩০০ খ্রিস্টাব্দে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে, পেরিপ্লাস অব দ্য এরিথ্রিয়ান সি বইতে এবং বিভিন্ন আরব, চীন ও ইতালীর পর্যটক ও ব্যবসায়ীর বর্ণনাতে। কৌটিল্যের বইতে বঙ্গ ও পুন্ড্র এলাকায় সূক্ষ্ম বস্ত্রের উল্লেখ আছে, যার মধ্যে ছিল ক্ষৌম, দুকূল, পত্রোর্ণ ও কার্পাসী।নবম শতাব্দীতে আরব ভূগোলবিদ সোলায়মান তার গ্রন্থ স্রিল সিলাই-উত-তওয়ারিখে রুমি নামের রাজ্যে সূক্ষ্ম সুতি কাপড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার বর্ণনা অনুসারে বোঝা যায়, রুমি রাজ্যটি আসলে বর্তমানের বাংলাদেশ। চতুর্দশ শতাব্দীতে বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা বাংলাদেশ পরিভ্রমণ করেন এবং সোনারগাঁও এলাকাস্থিত সুতিবস্ত্রের প্রশংসা করেছেন। যোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে ইংরেজ পর্যটক র্যালফ ফিচ ও ঐতিহাসিক আবুল ফজলও ঢাকার মসলিনের প্রশংসা করেছেন।আরেক ঐতিহাসিক টেলরের জামদানির বর্ণনা দিয়েছেন। তার বর্ণনানুসারে সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১০*২ হাত মাপের ও ৫ শিক্কা ওজনের একটুকরা আব-ই-রওয়ান এর দাম ছিল ৪০০ টাকা। সম্রাট আওরঙ্গজেবের জন্য তৈরি জামদানির দাম ছিল ২৫০ টাকা। ১৭৭৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের জামদানির মূল্য ছিল ৪৫০ টাকা। (সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
...
গ্রামবাংলার ধান, নকশিকাঁথা, কাসুন্দি, আচার, ভেষজ ও পিঠা, পাবনা শাড়ি, হাওরের নানিদ মাছ, চান্দারবিলের কৈ, ঢাকাই জামদানি, বাবুরহাটের তাঁত, পার্বত্য চট্টগ্রামের বেইন তাঁতে বোনা কাপড়, বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈ মণিপুরি শাড়ি ও চাদর, রংপুরের শতরঞ্জি, মিরপুর কাতান, বাংলার কালো ছাগল, চট্টগ্রামের লবণ, মুন্সিগঞ্জের কলা, ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যপুরী আম, যশোরের খেজুর গুড়, দিনাজপুরের কালিজিরা ধান, কালিয়াকৈরের ধনীর চিড়া, হাওর অঞ্চলের ধামাইল গান, উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গীত, দক্ষিণাঞ্চলের গাজীর গান, ঝিনাইদহের হরি ও ম্যানেজার ধান, সুন্দরবনের মধু, টাঙ্গাইল শাড়ি, বগুড়ার দই, সিলেটের সাতকরা, পদ্মার ইলিশ, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, মধুপুরের আনারস, মুক্তাগাছার মন্ডা, শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পান ও চা, পোড়াবাড়ীর চমচম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বান্দরবানের বম চাদর, কুমিল্লার খাদি, রুহিতপুরী লুঙ্গি, যশোরের জামতলার রসগোল্লা, পটুয়াখালীর নাপ্পি, কুলিয়ারচরের সিদল শুঁটকি—এ রকম অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যই চলমান রেখেছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্ব। দুনিয়ার সব ভূগোলে, সব যাপিত জীবনেই এ রকম বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক নির্দেশনা আছে।
ভবিষ্যতে হয়তো আমাদের রূপালী ইলিশ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার এগুলোর পেটেন্ট ও নিয়ে যাবে।
সূত্রঃ
১। http://www.valuka.com/News/NewsDetail/1474 (ভালুকা ডট কম)২। https://www.facebook.com/digitcharaTAL/posts/423385497698106 (
লাগবো না তোর ডিজিটাল বাংলাদেশ, ফেরত দে আমার এনালগ বাংলাদেশ)
৩। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-14/news/297713 (প্রথম আলো)
৪। http://www.somewhereinblog.net/blog/SBhai/29683985 (সামহোয়ার ইন ব্লগ)
৫। উইকিপিডিয়া
I hope so that you will be comment about this topics.
Blogger Comment
Facebook Comment