একটি কষ্টেভরা বাস্তব ঘটনা (দয়া করে এড়িয়ে যাবেন না)- হে সন্তানেরা মায়ের মনে কষ্ট দিওনা।


মা(Mother)
আমার মায়ের শুধু একটা চোখ ছিল।তাই তাকে দেখতে কিম্ভূতকিমাকার লাগত। এ কারনে মাকে নিয়ে প্রায়ই আমি বিব্রতবোধ করতাম। আমার বাবা ছিল না,স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য খাবার বানিয়ে আমার মা সংসার চালাতেন।
স্কুলে ভর্তি হবার কিছুদিন পর আমার মা আমাকে দেখার জন্য স্কুলে আসলেন।আমি তাকে দেখে খুবই বিব্রত হয়ে পড়লাম,আমি তাকে অগ্রাহ্য করলাম এবং তারদিকে না তাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলাম।
পরদিন আমি যখন স্কুলে আসলাম একটা ছেলে আমাকে বললো,’ছি! তোমার মায়ের একটা চোখ!’ আমার রাগে নিজেকে মাটিতে মিশিয়ে ফেলতে ইচ্ছা হল। আমি বাড়ি ফিরে মাকে বললাম,’তুমি কি আমাকে হাসির পাত্র বানাতে চাও?তুমি কেন স্কুলে গিয়েছিলে??তুমি মরো না কেন!!’ আমি নিজেও বুঝছিলাম না যে আমি কি বলছি কারন তখন আমি অসম্ভব রেগে ছিলাম।
আমার মা কিছু বললো না…আমি বাড়িতে থাকতে চাচ্ছিলাম না,তাই অমানসিক চেষ্টা করে ভাল রেসাল্ট করলাম এবং বিদেশে পড়তে চলে গেলাম।
বিদেশেই আমি বিয়ে করলাম। আমি নিজের বাড়ি কিনলাম।আমার ছেলেমেয়ে হল। স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি সুখেই ছিলাম। এরপর একদিন,আমার মা আমাকে দেখতে এল। সে এত বছরে একবারও আমাকে বা তার নাতি-নাতনিকে দেখেনি।
সে যখন আমার দরজায় দারালো আমার ছেলে-মেয়ে তাকে দেখে হাসি ঠাট্টা শুরু করলো। আমি তাকে রাগত স্বরে বললাম,’তুমি আমার বাসায় আসার সাহস কিভাবে করলে! আমার বাচ্চারা তোমাকে দেখে ভয় পেয়ে যেতে পারে এটা তোমার মাথায় ছিল না? এখুনি বের হয়ে যাও।’
এতসবকিছুর পরও আমার মা শান্তভাবে বললেন,’ওহ,আমি দুঃখিত। মনে হয় আমি ভুল ঠিকানায় এসেছি।’
একদিন আমি আমার স্কুলের রি-ইউনিয়নের চিঠি পেলাম। তাই আমি নির্দিষ্ট দিনে রিইউনিয়নে যোগ দিতে আমার শহরে ফিরলাম।অনুষ্ঠান শেষে ভদ্রতা করে আমার বাড়িতে গেলাম।আমার প্রতিবশীরা জানালো যে আমার মা মারা গেছেন,তারা আমাকে মায়ের দেয়া একটা চিঠি দিল।মায়ের শেষ থাগুলো সেখানে লেখা ছিল।
‘প্রিয় বাবুটা,
আমি সবসময় তোমাকে নিয়ে চিন্তা করি।আমি দুঃখিত যে আমি তোমার বাসায় তোমাকে দেখতে গিয়েছিলাম এবং তোমার সন্তানদের ভয় পাইয়ে দিয়েছি।
আমি খুব খুশি হয়েছিলাম এটা শুনে যে তুমি রি-ইউনিয়নে আসছো।তবে আমি হয়তো বিছানা থেকেও উঠতে পারবো না তোমাকে দেখতে যেতে কারন আমি খুব অসুস্থ। আমি দুঃখিত যে সারাজীবন আমি তোমার জন্য বিব্রতকর ছিলাম।
বাবা…তুমি যখন খুব ছোট ছিলে তখন তোমার একটা এক্সিডেন্ট হয় এবং তুমি একটা চোখ হারিয়ে ফেল।একজন মা হিসেবে আমার সন্তান একটা চোখ নিয়ে বড় হচ্ছে এটা চোখের সামনে দেখা আমার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব ছিল না। তাই আমি তোমাকে আমার চোখ দান করি।
আমি খুব গর্ব বোধ করতাম এটা ভাবতে যে আমার ছেলে আমার চোখ দিয়ে গোটা পৃথিবীটাকে দেখছে। আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালবাসা রইলো।


ইতি
‘তোমার মা’

ঘটনাটি আমার এক আত্মীয়ের সাথে ঘটেছে।

(copy)

Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment