স্টুডেন্ট কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলোর প্রতারণা কি ভাবে বুঝবেন? সবার পড়া উচিত!!

যুবরাজ শাহাদাত:”পাশের বাড়ির ছেলেটা বিদেশে পড়াশোনা করছে”- এরকম কিছু শুনলেই মনের ভিতর কত রকম হাতছানি ডাক দিয়ে যায়, উন্নত জীবন, অনেক টাকার চাকরি, নিশ্চিত ভবিষ্যত, নানান দেশে ঘোরা, ফ্যামিলির মধ্যে একটা শক্ত খুঁটি আরো কত কি…………..এই সব কারণেই বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মত অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক দেশের ছেলে-মেয়েদের মধ্যেই বিদেশে যেয়ে পড়াশোনা করার একটা তীব্র তাগিদ কাজ করে। দেশে যে কিছু করা যায়না তা নয় বরং দেশেই অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। তারপরও কে না চায় একটু নিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে? বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ইদানিং বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার হার অনেক বেড়েছে। উন্নত দেশগুলোর স্টুডেন্ট ভিসার নিয়ন-কানুনের শিথিলতা, স্টুডেন্ট কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলোর চমকদার বিজ্ঞাপন, তথ্যের সহজলভ্যতা এই সংখ্যা বাড়ার পিছনে কাজ করেছে। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রী যাবার হার বাড়ার সাথে সাথে কনসাল্টেন্সি ফার্ম গুলোর প্রতারণার হার ও সমান তালে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। কত পরিবার যে এদের কারণে সর্বস্বান্ত হয়েছে তার কোনো সঠিক হিসাব সম্ভবত কারো কাছে নেই।
এখন প্রশ্ন হলো স্টুডেন্টরা কেন এই কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলোর কাছে যায়? অনেকে তো নিজের চেষ্টাতেই যাচ্ছে তাহলে অন্যরা পারছে না কেন? তারা কি অলস? উত্তর হচ্ছে না। আমাদের দেশের নির্মম বাস্তবতা হলো সব এলাকার বা সব স্কুলের ছেলে-মেয়েরা একই রকম সুযোগ-সুবিধা পেয়ে বড় হয় না। তাই অনেকেই অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে। এছাড়া একটু দরিদ্র দেশ হওয়ায় বিদেশে পড়াশোনার জন্য যেতে হলে অনেক ধরনের কাগজ-পত্র আমাদের সাবমিট করতে হয় এম্বেসিতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা প্রমান করার জন্য। এক বছর অথবা তারও বেশি বছরের টিউশন ফিসের সমপরিমাণ টাকা ৩-৬ মাস ব্যাঙ্কে রেখে দেখাতে হয়। এর উপর আছে ফ্যামিলি টাই প্রমান করা, নিজেদের যে পাহাড় পরিমান সম্পত্তি আছে তা দেখানো, কত কিছু !!!!! বাংলাদেশে কয় জনের আছে এত আর্থিক সামর্থ্য? তাই বলে কি স্বপ্ন পূরণ হবে না? তখনি আমরা যাই স্টুডেন্ট কনসাল্টেন্সি ফার্মের কাছে। বাংলাদেশের স্টুডেন্ট কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলো এপ্লিকেশন থেকে শুরু করে স্পন্সরশিপ দেখানো পর্যন্ত সব কাজই করে দেয় নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে এবং যতটুকু না লাগে তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা নেয় নানান অজুহাত দেখিয়ে। এমনও হয় যে প্রথমে হয়ত বলেছিল যে অল্প কিছু টাকা লাগবে পরে স্টুডেন্টকে স্বপ্ন দেখিয়ে অনেক সমস্যার কথা বলে আরো টাকা হাতিয়ে নেয়। অনেক ফার্ম পুরো টাকা নিয়ে ভেগে গেছে এমন উদাহরণও আছে। বেশ কয়েক বছর আগে পুরান পল্টনের ইউনাইটেড নামে একটা ফার্ম প্রায় তিন কোটি টাকা মেরে উধাও হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত তার কোনো সুরাহা হয়নি।
আগেই জানা ছিল কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলো কিভাবে নানান অজুহাতে টাকা নেয়, তারপরও একদম হালের তথ্য জানার জন্য আমি ফোন দেই ধানমন্ডি এবং গুলশানে অবস্থিত বাংলাদেশের দুটো বড় কনসাল্টেন্সি ফার্মে, যাদের বিজ্ঞাপন প্রায় প্রতিদিনই পেপারে দেখা যায়। প্রথমেই ফোন দিলাম ধানমন্ডি সিটি কলেজের একটু সামনে অবস্থিত কনসাল্টেন্সি ফার্মে। ফোন দিয়েছিলাম একজন বিদেশে পড়তে পড়তে আসতে ইচ্ছুক ছাত্রের বড় ভাই সেজে যে আমেরিকায় থাকে। যে কাউন্সেলর ফোন ধরলেন তিনি কিছুতেই ফোনে কত টাকা লাগবে তা বলতে চাচ্ছিলেন না। অনেক অনুরোধের পর এবং আমি নিজে বাইরে থাকি, আমার পক্ষে সরাসরি এসে তার সাথে দেখা করা সম্ভব নয় এবং আমার বিদেশে থাকার সুযোগে আমার ছোট ভাই সবসময়ই দরকারের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আমার কাছ থেকে নেয় বিভিন্ন অজুহাতে এটা বলার পরে উনি আমাকে একটা হিসাব দিলেন। প্রায় ৩,৫০,০০০ টাকার হিসাব। তাদের সাথে কাজ করার জন্য প্রথমেই ৩,১৩৫ টাকা দিয়ে ফাইল ওপেন করতে হবে তাদের ফার্মে। এরপর তারা যেই ইউনিভার্সিটির সাথে কাজ করেন তার এপ্লিকেশন ফিস দিতে হবে ২০০ ডলার অথবা ১৫,৫০০ টাকা আর ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রেশন ফিস ৩৩,৯৬০ টাকা। পূরণকৃত এপ্লিকেশন আর সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য পেপারস ইউ.এস.এ তে পাঠানোর জন্য ডি.এইচ.এল ফি দিতে হবে ৫০০০ টাকা। এর কিছুদিন পরে টিউশন ফিস বাবদ জমা দিতে হবে ২,৬০,০০০ টাকা। এই ২,৬০,০০০ টাকার লেনদেন হবে স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তির মাধ্যমে। ইউনিভার্সিটির আই-২০ আসার পর তাদের সার্ভিস চার্জ দিতে হবে ১৮,৫০০ টাকা এবং ভিসা হওয়ার পর আরো ১০,০০০ টাকা। মোট ৩,৪৬,০৯৫ টাকা। এর মধ্যে এম্বেসী ফিস এবং সেভিস ফিস অন্তর্ভুক্ত নয়। এগুলো আপনার নিজের দিতে হবে। যদি আই-২০ না আসে অথবা ভিসা না হয় তবে ফেরত পাওয়া যাবে টিউশন ফিস হিসাবে দেওয়া ২,৬০,০০০ টাকা। কিন্তু এই টাকা তারা ফেরত দিবে তিন মাস পর। ভিসা না হলে টাকা ফেরত না নিয়ে আবার তাদের মাধ্যমে চেষ্টা করা যাবে। সেক্ষেত্রে শুধু এপ্লিকেশন ফিস ২০০ ডলার আবার দিতে হবে। টাকা নিয়ে উনি আমাকে পুরোপুরি নিশ্চিত থাকতে বললেন। সাথে এও বললেন যে ওনাদের ফার্ম থেকে প্রসেসিং করা মানে ১০০% ভিসা পাওয়ার নিশ্চয়তা কারণ ওনারা খুবই এফিসিয়েন্সির সাথে সাপোর্টিভ ডকুমেন্টস তৈরী করে দেন। সব চেয়ে মজার কথা যেটা উনি বললেন তা হলো একবার যদি আই-২০ এসে যায় এর মানে হলো ৮০% ভিসা পেয়ে যাওয়া কারণ আমেরিকার এডুকেশন বোর্ড এটা ইস্যু করে। আই-২০ ইস্যু হওয়ার মানে হলো এডুকেশন বোর্ড চায় আমি আমেরিকায় পড়তে আসি।
গুলশান সার্কেলে অবস্থিত কনসাল্টেন্সি ফার্মটি একটু এদিক ওদিক করে প্রায় একই সুরে গান গাইল। ওনাদের ফাইল ওপেনিং চার্জ ৫,০০০ টাকা। পেপারস পাঠানোর জন্য কুরিয়ার চার্জ ৫,০০০ টাকা। এপ্লিকেশন ফিস ইউনিভার্সিটি অনুযায়ী দিতে হবে। সার্ভিস চার্জ ২০,০০০ টাকা। এক সেমিস্টারের টিউশন ফিস জমা রাখতে হবে ৪,৫০,০০০ টাকা। অলমোস্ট ৫,০০,০০ এর পুরোটাই দিতে হবে ভিসা হওয়ার আগে। টিউশন ফিস আগে কেন দিতে হবে তা জানতে চাইলে বললেন “ভার্সিটির সিকিউরিটির জন্য” !!!!! ভিসার নিশ্চয়তা দিলেন। এরাও স্ট্যাম্প পেপারে ডীড করে টাকা নিবেন। দূর্ভাগ্যবশত ভিসা না হলে শুধু টিউশন ফিসের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। কতদিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিবেন তা উনি ফোনে বলতে রাজি হননি। বলেছেন স্টুডেন্টকে পাঠাতে। তাকে বিস্তারিত বলবেন। এম্বেসী ফিস আর সেভিস ফিস নিজেদের দিতে হবে।
বাংলা মোটর মোড়ের আগে কানাডার ভিসা প্রসেসিং করে এমন একটি ফার্মে ফোন দিয়ে অনেকক্ষণ কথা বলার পর এবং দেশে থেকে কিছুই করতে পারছি না, তীব্র হতাশায় আমি জর্জরিত, বেঁচে থাকা না থাকা প্রায় সমান কথা ইত্যাদি নানা কিছু বলার পর আমাকে বলা হলো মাত্র ১০ লক্ষ টাকা দিলে ওনারা কানাডার নিশ্চিত ভিসার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। কারণ কানাডিয়ান এম্বেসিতে ওনাদের “নিজস্ব লোক” আছে। শ্যামলীতে অবস্থিত একটি ফার্ম বলল স্টুডেন্ট ভিসায় ইউ.এস.এ তে ওনারা লিগ্যালি কাজের ব্যবস্থা করে দিবেন !!!!!
এই হচ্ছে দেশের কনসাল্টেন্সি ফার্মের অবস্থা। তাদের দেয়া হিসাবের মধ্যের ৮০% টাকাই ভিসার পূর্বে দেয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। অবশ্য সব কনসাল্টেন্সি ফার্ম যে একরকম তা নয়। কিছু ফার্মে ফোন দিয়ে ভালো অভিজ্ঞতাও হয়েছে। তারা মোটামুটি যে পরিমান টাকা এপ্লাই করতে দরকার তাই চেয়েছে আর ভিসা হলে দিতে হবে তাদের সার্ভিস চার্জ।
একটু সাবধান থাকলে আর কিছু কিছু ব্যাপার জেনে রাখলে কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলোর প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে কনসাল্টেন্সি ফার্ম ভিসার নিশ্চয়তা সম্পর্কে কি বলছে। তারা যদি বলে ১০০% ভিসার নিশ্চয়তা দিচ্ছি তাহলে আপনিও নিশ্চিত হয়ে যেতে পারেন যে এরা ভুয়া আর মিথ্যা কথা বলছে। কোন কনসাল্টেন্সি ফার্মই ভিসার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। এটা সম্পূর্ণই এম্বেসীর উপর নির্ভর করে। আপনি বা কনসাল্টেন্সি ফার্ম সর্বোচ্চ যা করতে পারে তা হলো আপনার পেপারস স্ট্রং ভাবে তৈরী করে দিতে। আমেরিকায় থাকার কারণে এখানকার ভর্তি পক্রিয়া সম্পর্কে জানি। বেশ কিছু নামকরা ফার্ম আমেরিকায় ভর্তির নাম করে অনেক টাকা এপ্লিকেশন ফিস নেয় যেখানে আমেরিকায় সাধারনত ৮০ ডলারের উপর এপ্লিকেশন ফিস নেই। এরপর তারা নেয় রেজিস্ট্রেশন ফিস। এই ফিস নেয়ার কোন এক্তিয়ার তাদের নেই। ভিসা পাবার পর স্টুডেন্ট যখন ভার্সিটিতে পৌঁছাবে তখন কোর্স রেজিস্ট্রেশনের পর এই ফিস দিতে হয় যা পরিমানে খুবই সামান্য। কিন্তু এই ফিসের নামে তারা এপ্লিকেশন ফিসের চেয়েও বেশি টাকা নেয়। সব চেয়ে বড় প্রতারণা ঘটে টিউশন ফিস নিয়ে। অনেক ফার্মই আগে টিউশন ফিস পাঠালে ভিসা পাবার সম্ভবনা বেড়ে যাবে বলে স্টুডেন্টদের থেকে বড় একটা টাকার অংক নেয়। যা তারা আসলে ইউনিভার্সিটিতে পাঠায় না। পুরোটাই আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে। ভিসা পেলে আমেরিকায় এসে স্টুডেন্ট দেখে কোনো টিউশন ফিস দেয়া হয় নি। কিন্তু তখন আর কিছুই করার থাকে না। আসল ঘটনা হলো আমেরিকায় কোনো ইউনিভার্সিটিতেই স্টুডেন্টদের কোর্স রেজিস্ট্রেশন করার আগে এক টাকাও টিউশন ফিস দিতে হয় না। তাই কোনো কনসাল্টেন্সি ফার্ম আগে টিউশন ফিসের টাকা চাইলে সাথে সাথেই বুঝে যাবেন তারা মিথ্যা বলছে। এরপর আছে যদি তারা স্পন্সর দেখিয়ে দেয়। এই ব্যাপারে কিছু বলার নেই, আপনি যেভাবে তাদের সাথে ডিল করতে পারেন। তবে সব দেশের এম্বেসীই স্টুডেন্ট এর বাবা-মা অথবা ভাই-বোনের স্পন্সরশিপ এর গুরুত্ব বেশি দেয়। নিজের ফ্যামিলির স্পন্সরশিপ দেখালে ভিসা পাবার সম্ভবনাও অনেক বেশি থাকে। তাই কনসাল্টেন্সি ফার্ম থেকে স্পন্সরশিপ না দেখিয়ে নিজেরা যতটুকু পারেন টাকা যোগাড় করে আর বাকিটা আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করে স্পন্সরশিপ এর ব্যাপারটা ম্যানেজ করে ফেলাই ভালো। অথবা ব্যাঙ্কের লোন ও নেয়া যায়। অনেক ব্যান্কই নির্দিষ্ট ফিসের বিনিময়ে আপনার একাউন্ট লক করে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দেখিয়ে দেবে।
ইউ.এস.এ এর ভিসা ইন্টারভিউ ফেস করার পরে অনেকেই এডমিনিসট্রেটিভ প্রসেসিং এর আওতায় পরেন। এর মানে হলো আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড তারা একটু ডিটেইলসে চেক করবে। এই প্রসেসিং এ যারা পরে তাদের ৯০% ই পরে ভিসা পেয়ে যায়। যাদের ভিসা দেয়ার জন্য মনোনীত করা হয়েছে কিন্তু ভিসা অফিসারের কোন একটা বিষয় নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে শুধু তাদেরই এই প্রসেসিং এ ফেলা হয়। যেহেতু ৯০% ই ভিসা পায় তাই কনসাল্টেন্সি ফার্ম গুলো এখানে একটা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে। তারা বলে আমাদের এম্বেসীতে লোক আছে। তাদের সাথে ডিল করলে ভিসা নিশ্চিত নাহলে কিন্তু ওরা মাসের পর মাস ঘুরাবে। যারা জানে না বা প্রথম প্রথম চেষ্টা করছে তাদের অনেকেই এই ফাঁদে পা দেয়। ক্ষতি কি কিছু টাকার বিনিময়ে যদি আমেরিকার ভিসাটা নিশ্চিত করা যায় !!!!! এইসব কথায় একদম কান দেবেন না। প্রতারণার আরেক পন্থা হলো সঠিক তথ্য গোপন করা অথবা ভুল তথ্য দেয়া। ফার্মগুলো নতুন স্টুডেন্টদের অনেক ভালো ইউনিভার্সিটি বলে অখ্যাত কোন ইউনিভার্সিটি থেকে এডমিশন লেটার বা আই-২০ আনায় যাতে ভিসা পাবার সম্ভবনা খুবই কম থাকে আর পেলেও ওই ইউনিভার্সিটিতে যেয়ে আখেরে তেমন লাভ হয় না। লাভ হয় কনসাল্টেন্সি ফার্মগুলোর। এইসব ইউনিভার্সিটির সাথে এদের চুক্তি থাকে। স্টুডেন্টদের টিউশন ফিসের একটা পার্সেন্টেজ এরা পেয়ে থাকে। এছাড়া ইউনিভার্সিটি হয়ত হচ্ছে প্রত্যন্ত কোনো অঞ্চলে, আপনাকে বলা হবে একদম শহরের প্রাণ কেন্দ্রে। অথবা খুব সহজেই জব পেয়ে যাবেন আর জব করে খুব সহজেই টিউশন ফিস পরিশোধ করা সম্ভব। ক্ষেত্রবিশেষে কেউ কেউ দিয়ে থাকেন জব দেয়ার প্রতিশ্রুতি যা পুরোপুরি অসম্ভব। তাই কনসাল্টেন্সি ফার্মের কথায় কান না দিয়ে নিজেই ইন্টারনেটে সার্চ করে ইউনিভার্সিটির কি অবস্থা, কোথায় অবস্থিত, কত স্টুডেন্ট পড়ে, র‌্যাঙ্কিং কত তা দেখে নেয়া ভালো। ইউ.এস.এ তে পড়ার ক্ষেত্রেhttp://www.usnews.com অথবা http://www.4icu.org ভালো সহায়ক হতে পারে।http://www.4icu.org ওয়েবসাইটটিতে সারা পৃথিবীর ইউনিভার্সিটিগুলোর র‌্যাঙ্কিং দেখা যায়। যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে জব করে চলতে হবে তাহলে খোঁজ নিন কাঙ্খিত দেশের স্টুডেন্ট ভিসা পলিসি নিয়ে। তারা কি স্টুডেন্ট দের কাজ করার অনুমতি দেয় কি না। দিলে সপ্তাহে কত ঘন্টা। যদি লিগ্যালি কাজ করার অনুমতি না থাকে তাহলে অফ দ্যা বুক কাজ করার সুবিধা কেমন পাওয়া যায়। যেমন আমেরিকায় স্টুডেন্ট দের অফ ক্যাম্পাস কাজের অনুমতি নেই। অন ক্যাম্পাস মাত্র ২০ ঘন্টার অনুমতি আছে যা খুব ই অপ্রতুল। কিন্তু নিউ ইয়র্ক, কানেকটিকাট, নিউ জার্সি, টেক্সাস, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা এই সব স্টেটে আমাদের উপমহাদেশীয় প্রচুর লোকজন থাকায় ক্যাশে কাজ পাওয়া যায় যা অন্যান্য স্টেটে অনেকটাই অসম্ভব। এছাড়া সব দেশের এম্বেসীরই তাদের কোন না কোন শিক্ষা বিষয়ক অঙ্গ সংস্থা থাকে। যেমন আমেরিকান এম্বেসীর আছে আমেরিকান সেন্টার, ব্রিটিশ এম্বেসীর এডুকেশন ইউ.কে। এদের থেকে অনেক সহায়তা পাওয়া যায় তাদের দেশে পড়তে যাওয়া বিষয়ক। আর এরা যে তথ্য দিবে তাতে চোখ বন্ধ করে নির্ভর করা যায়। এইসব ব্যাপার একটু খেয়াল রাখলেই আশা করি আপনার মাথায় আর কেউ কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে পারবে না। সবার স্বপ্ন পূরণ হোক। ভালো থাকুন সবাই।(copy)
Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment