রাইট ইস্যু ত্বরিত গতিতে অনুমোদন
আটকে থাকা রাইট আবেদন অনুমোদন দেয়ার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষানো এবং ইক্যুইটি ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে বাজার সংশ্লিটরা জানিয়েছেন। তাদের মতে, বাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির চেয়ে রাইট শেয়ারের অনুমোদন দেয়া হলে এসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের লোকসান কমবে। পাশাপাশি এসব শেয়ার অবমূল্যায়ন হবে না।
এ বিষয়ে বাজার বিশ্লেষক আকতার হোসেন সান্নামাত শেয়ার নিউজ ২৪ ডটকমকে বলেন, ১০টি কোম্পানির রাইট আবেদন এসইসিতে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। বাজারে বিভিন্ন ধরণের প্রনোদনা দেয়া হচ্ছে। রাইট অনুমোদনের মাধ্যমে ইক্যুইটি নেতিবাচক ধারায় থাকা বিনিয়োগকারীদের লোকসান কিছুটা হলে কমানো সম্ভব হবে। এসইসি বিষয়টি জরুরীভাবে বিশ্লেষণ করে দেখতে পারে। আর এটা করা হলে এসব কোম্পানির লেনদেনেও স্বাভাবিক গতি আসবে বলে তিনি জানান।
বাজার বিশ্লেষক একরামুল হক এ বিষয়ে বলেন, রাইট অনুমোদন এবং ঘোষণার মাঝে সময়ক্ষেপণ দূর করতে হবে। বর্তমান বাজারে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক ক্ষতি কমাতে আটকে থাকা রাইটগুলোর অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। এটা বাজারে একটা প্যাকেজ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
রাইট অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডে, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স, কেয়া কসমেটিক্স লি: ও এফএএস ফ্যাইনান্স ইনভেস্টমেন্ট লি:।
এছাড়া গত কমিশন সভায় সায়হাম টেক্সটাইলস্ মিলস এর রাইট শেয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি রাইট শেয়ার ইস্যুর বিধিমালা, ২০০৬ এর সংশোধনী চূড়ান্ত ভাবে অনুমোদন গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে এসইসি। এ অবস্থায় পাইপলাইনে আটকে থাকা ১০ কোম্পানির রাইট অনুমোদনে আর কোন জটিলতা থাকছে না। চলতি মাসের মধ্যেই ওইসব কোম্পানিগুলোর রাইট শেয়ার বাজারে ছাড়ার অনুমোদন এসইসি দেয়া শুরু করতে বলে এক কমিশন সদস্য জানিয়েছে।
তথ্য মতে, এ কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্প্রতি রাইটের ঘোষণা দিয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। এছাড়া বাকি ৯ কোম্পানি অনেক দিন আগেই আবেদন করলেও এখনো তা অনুমোদন দেয়া হয়নি। তাই কোম্পানিগুলোকে দ্রুত অনুমোদন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, পিপলস লিজিং কোম্পানির বর্তমানে বাজারে ১৯ কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার ৩শ ৩০টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে এর বিপরীতে ১ঃ২ অর্থাৎ দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১৫ টাকা প্রিমিয়াম দাবি করেছে।
ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক (আইএসএন) কোম্পানির বর্তমানে ৯৯ লাখ ৪ হাজার ৭৬৫টি শেয়ার রয়েছে। কোম্পানিটি ১ঃ১ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। ১০ টাকা ফেস ভ্যালুর প্রতিটি রাইট শেয়ারের ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ২০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বর্তমানে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ৪৩টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে এর বিপরীতে ১ঃ৩ অর্থাৎ ৩টি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। ১০০ টাকা ফেস ভ্যালুর প্রতিটি রাইট শেয়ারের ১০০ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ২০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ।
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বর্তমানে ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৭১৫টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে ১ঃ২ অর্থাৎ ২টি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। ১০০ টাকা ফেস ভ্যালুর প্রতিটি রাইট শেয়ারের ৫০ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ।
বর্তমানে ব্যাংক এশিয়ার ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৩২৫টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে ১ঃ৪ অর্থাৎ ৪টি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। কোম্পানিটির অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। তবে এ কোম্পানি রাইট শেয়ারের বিপরীতে কোনো প্রিমিয়াম নেবে না ।
ট্রাস্ট ব্যাংকের বর্তমানে ২ কোটি ৬৬ লাখ ১১ হাজার ২৭৪টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে ১ঃ৫ অর্থাৎ ৫টি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। ১০০ টাকা ফেস ভ্যালুর প্রতিটি রাইট শেয়ারের ১০০ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ২০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের বর্তমানে ৮ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০০টি শেয়ার রয়েছে। এসইসির কাছে ১ঃ১ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার আবেদন করেছে। কোম্পানিটির অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। এ কোম্পানিও কোনো প্রিমিয়াম দাবি করেনি।
Source: শেয়ার নিউজ
Blogger Comment
Facebook Comment