আইপিও আগমনী বার্তায় বাড়ছে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা

বাজারে আসছে নতুন নতুন কোম্পানির আইপিও আসার সংবাদে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে নতুন বিও খোলার প্রবণতা বেড়েছে। বেড়েছে নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। বাজার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক বছরে বাজারে নতুন বিও হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে  প্রায় ৭৭ লাখ।
২০১০ সালের ডিসেম্বরের অতিমূল্যায়িত বাজারে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৩৩ লাখের কাছাকাছি। তখন বাজারে এলেই দ্বিগুণ লাভ, এমন একটা প্রচারণা ছিল। কিন্তু বাজার ধসের পর দ্রুতই কমতে শুরু করে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা। আবার বিও থাকলেও দ্রুত কমতে থাকে শেয়ারধারী বিওর সংখ্যা। লোকসানের বাজারে শেয়ার বিক্রি করে বেশিরভাগ হুজুগে শেয়ার ব্যবসায়ী বাজার থেকে বের হয়ে যেতে থাকে। দেখা যাচ্ছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ধসের পর পরই বাজারে মোট বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৩৩ লাখ। কিন্তু তাদের মধ্যে শেয়ারধারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১২ লাখ। সেখানে ধস পরবর্তী ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৯ লাখে। জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাজার অতিমূল্যায়িত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ তাদের বিও হিসাবে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়। বড় ধরনের মুনাফা নিয়ে এসব বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজার থেকে বের হয়ে গেলে তাদের বিও হিসাব শেয়ারশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ বিও হিসাবের মধ্যে ২১ লাখ বিও হিসাবে কোনো শেয়ার ছিল না। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে মোট বিও হিসাব ছিল ৩২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪৮টি। যার মধ্যে মাত্র ১১ লাখ ৯৭ হাজার ১৭৫টি বিও হিসাবে শেয়ার ছিল। অবশিষ্ট ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭৩টি বিও হিসাবে কোনো শেয়ার ছিল না। শেয়ার না থাকা এসব বিও হিসাবের মধ্যে ১২ লাখ ২৬ হাজার ৮২৮টি বিও হিসাবে কখনোই কোনো শেয়ার ছিল না। বাকি ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৭৪৫টি বিও হিসাবে এক সময় শেয়ার থাকলেও ডিসেম্বর মাসে ভয়াবহ দরপতন শুরু হলে এসব বিও হিসাব থেকে সব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পুঁঁজিবাজারে মোট বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮ লাখ ৫ হাজার ৬২৮টি। যার মধ্যে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬টি বিও হিসাবে শেয়ার রয়েছে। অবশিষ্ট ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৯২টি বিও হিসাবে কোনো শেয়ার নেই। শেয়ার না থাকা এসব বিও হিসাবের মধ্যে ৪ লাখ ১ হাজার ২১০টিতে কখনোই কোনো শেয়ার ছিল না। বাকি ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১৮২টি হিসাবে এক সময় শেয়ার থাকলেও বর্তমানে কোনো শেয়ার নেই।
সিডিবিএল সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে শেয়ারসহ বিও হিসাবধারী বেড়েছে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৬১টি। এদের মধ্যে আবার ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসে শেয়ারধারী বিও হিসাব বেড়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৯৪টি এবং জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে বেড়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৬৬৭টি।
সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে শূন্য শেয়ার ধারণকারী বিও হিসাবের সংখ্যা ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৭৪৫টি থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে কমে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১৮২টিতে নেমে আসে। এ ছাড়াও এ সময় অব্যাহত বিও হিসাবের সংখ্যা ১২ লাখ ২৬ হাজার ৮২৮ থেকে কমে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১৮২টি নেমে আসে। নতুন বছরের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিতের ফলে আবারও নতুন বিনিয়োগকারী আসতে শুরু করেছে। বাজারে আসা নতুন বিও হিসাবধারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বুঝেই বাজারে বিনিয়োগ নিয়ে আসছেন। অনেক কোম্পানি আইপিও নিয়ে বাজারে আসছেÑ এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা বিও খুলছেন। নতুন বিও খুলেছেন সাবিনা রহমান। গতকাল তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি দৈনিক স্টক বাংলাদেশকে বলেন, আইপিওতে আবেদন করবো। সেকেন্ডারি মার্কেটে দেখে শুনে পরে যাব। তিনি জানান, যতটুকু বুঝতে পারছি, তাতে বাজার ভালো হবে বলে অনেকেই বলছেন। তবে দীর্ঘ সময়ের প্রস্তুতি নিয়েই তিনি বাজারে আসছেন বলে জানান।

source: dailystock
Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment