লোকসানে
থাকার পরও টানা ৫ অর্থবছর ‘ভূয়া’ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পদ্মা লাইফ
ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। আর ভূয়া মুনাফা ঘোষণার উপর ভিত্তি করে
পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবে (আইপিও) আসছে কোম্পানিটি। এ বিষয়ে
নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) কাছে
দু’দফা অভিযোগ করার পরও কোনো লাভ হয়নি।
জানা গেছে, বার্ষিক প্রতিবেদনে লোকসান দেখালেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রথম ২ বছরের লভ্যাংশ ঘোষণার দায়ে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা পদ্মা লাইফকে জরিমানা করে। তবে তা আমলে না নিয়ে পরবর্তী ৩ বছরও একই পন্থায় লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বেসরকারি খাতের এই জীবন বীমা কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে এসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের কাছে দু’দফা আভিযোগ করে জীবন বীমা করপোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। সর্বশেষ গত ২৫ ডিসেম্বরের অভিযোগ পত্রে মোস্তাফিজুর রহমান, পদ্মা ইসলামী লাইফের বোর্ড কর্তৃক ভূয়া মুনাফা দেখিয়ে বিভিন্ন পন্থায় বহু টাকা আত্মসাতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গত ১৮ ডিসেম্বর এসইসির চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেন। এর পর ২০ ডিসেম্বর মোস্তাফিজুর রহমান এসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে অফিসে দেখা করতে যান। তবে ওই দিন চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার দেখা হয়নি।
এ বিষয়ে এসইসির চেয়াম্যানের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এসইসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, দূর্নীতি করেও পদ্মা লাইফকে আইপিওতে যেতে সাহায্য করছে এসইসির এক সদস্য।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বরের অভিযোপত্র থেকে জানা যায়, এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদ্মা লাইফের অনিয়ম-দূর্নীতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পরিচালকদের ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ খুজে পায় বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়োজিত অডিট ফার্ম। একই সঙ্গে কোম্পানিটির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের হিসাবে গোঁজামিলের তথ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফার্মটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত অর্থ-আত্মসাতের উদ্যেশ্যেই লভ্যাংশের ব্যাপারে অসত্য তথ্য প্রদর্শন করেছে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ।
অভিযোগপত্রে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লভ্যাংশ দেখিয়ে তা তুলে নেয়া এবং ২০০৯ সালের এ্যাকচুয়ারী ভ্যাল্যুয়েশন রিপোর্টেও খাতওয়ারি ব্যাপক গোঁজামিলের চিত্র তুলে ধরা হয়।
আইডিআরএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি অনুযায়ী, পদ্মা লাইফ ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুশেন রিপোর্টে ৮ কোটি টাকার বেশি লোকসানের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করলেও পরিচালকরা তাদের মূলধন ৩ কোটি টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ বাবদ ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তুলে নেয়। ৩টি খাতে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোম্পানির একাধিক প্রকল্প থেকে ওই পরিমান টাকা পরিচালকরা তুলে নিয়েছেন। এমন অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যদের ২ কোটি টাকা জরিমানা করে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশের তোয়াক্কা না করে নানা কৌশলে তা ধামা চাপা দেয়া হয়।
হিসাবে গোঁজামিল দিয়ে লাইফ ফান্ড বেশি দেখানোর অভিযোগও রয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ২০০৮ সালে ১১৮ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করে লাইফ ফান্ড দাঁড়ায় ৭২ কোটি টাকা। অথচ পরর্বতী বছরে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ১৬১ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয়ে লাইফ ফান্ড দাঁড়ায় ১৪৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে লাইফ ফান্ডের এ প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক নয় বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের অভিযোগ যাচাই করতে ২০০৮ ও ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনেও গোঁজামিল খুঁজে পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে কোম্পানির মোট খরচ দেখানো হয় ৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকা বিবিধ খরচ দেখানো হলেও তার কোনো খাত উল্লেখ করা হয়নি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থানা ব্যয়ের সীমার বাইরে ১৪ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করা হয়েছে। অথচ ১৬ শতাংশ অতিরিক্ত খরচ করে ৪ কোটি টাকা লভাংশ দেখনো অস্বাভাবিক। একই ভাবে ২০০৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে ১১৮ কোটি টাকা নিট প্রিমিয়াম আয় প্রদর্শন করা হয়। অথচ একটি বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাখিল করা তথ্যে পলিসি দায় দেখানো হয়েছে ৭২ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনো অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে চাননি পদ্মা ইসলামী লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রব্বানী চৌধুরী। তবে ২০০৭ সালে বীমা অধিদফতরকে জরিমানা না দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, আদালতের আদেশে বিষয়টি স্থগিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পদ্মা ইসলামী লাইফ গত ২২ নভেম্বর আইপিও অনুমোদন পায়। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে সাবক্রিপশন শুরু হবে। প্রাথমারী মার্কেট থেকে কোম্পানিটি ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
শেয়ারনিউজ২৪
জানা গেছে, বার্ষিক প্রতিবেদনে লোকসান দেখালেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রথম ২ বছরের লভ্যাংশ ঘোষণার দায়ে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা পদ্মা লাইফকে জরিমানা করে। তবে তা আমলে না নিয়ে পরবর্তী ৩ বছরও একই পন্থায় লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বেসরকারি খাতের এই জীবন বীমা কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে এসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের কাছে দু’দফা আভিযোগ করে জীবন বীমা করপোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। সর্বশেষ গত ২৫ ডিসেম্বরের অভিযোগ পত্রে মোস্তাফিজুর রহমান, পদ্মা ইসলামী লাইফের বোর্ড কর্তৃক ভূয়া মুনাফা দেখিয়ে বিভিন্ন পন্থায় বহু টাকা আত্মসাতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গত ১৮ ডিসেম্বর এসইসির চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেন। এর পর ২০ ডিসেম্বর মোস্তাফিজুর রহমান এসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে অফিসে দেখা করতে যান। তবে ওই দিন চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার দেখা হয়নি।
এ বিষয়ে এসইসির চেয়াম্যানের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এসইসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, দূর্নীতি করেও পদ্মা লাইফকে আইপিওতে যেতে সাহায্য করছে এসইসির এক সদস্য।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বরের অভিযোপত্র থেকে জানা যায়, এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদ্মা লাইফের অনিয়ম-দূর্নীতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পরিচালকদের ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ খুজে পায় বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়োজিত অডিট ফার্ম। একই সঙ্গে কোম্পানিটির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের হিসাবে গোঁজামিলের তথ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফার্মটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত অর্থ-আত্মসাতের উদ্যেশ্যেই লভ্যাংশের ব্যাপারে অসত্য তথ্য প্রদর্শন করেছে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ।
অভিযোগপত্রে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লভ্যাংশ দেখিয়ে তা তুলে নেয়া এবং ২০০৯ সালের এ্যাকচুয়ারী ভ্যাল্যুয়েশন রিপোর্টেও খাতওয়ারি ব্যাপক গোঁজামিলের চিত্র তুলে ধরা হয়।
আইডিআরএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি অনুযায়ী, পদ্মা লাইফ ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুশেন রিপোর্টে ৮ কোটি টাকার বেশি লোকসানের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করলেও পরিচালকরা তাদের মূলধন ৩ কোটি টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ বাবদ ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তুলে নেয়। ৩টি খাতে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোম্পানির একাধিক প্রকল্প থেকে ওই পরিমান টাকা পরিচালকরা তুলে নিয়েছেন। এমন অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যদের ২ কোটি টাকা জরিমানা করে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশের তোয়াক্কা না করে নানা কৌশলে তা ধামা চাপা দেয়া হয়।
হিসাবে গোঁজামিল দিয়ে লাইফ ফান্ড বেশি দেখানোর অভিযোগও রয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ২০০৮ সালে ১১৮ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করে লাইফ ফান্ড দাঁড়ায় ৭২ কোটি টাকা। অথচ পরর্বতী বছরে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ১৬১ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয়ে লাইফ ফান্ড দাঁড়ায় ১৪৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে লাইফ ফান্ডের এ প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক নয় বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের অভিযোগ যাচাই করতে ২০০৮ ও ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনেও গোঁজামিল খুঁজে পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে কোম্পানির মোট খরচ দেখানো হয় ৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকা বিবিধ খরচ দেখানো হলেও তার কোনো খাত উল্লেখ করা হয়নি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থানা ব্যয়ের সীমার বাইরে ১৪ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করা হয়েছে। অথচ ১৬ শতাংশ অতিরিক্ত খরচ করে ৪ কোটি টাকা লভাংশ দেখনো অস্বাভাবিক। একই ভাবে ২০০৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে ১১৮ কোটি টাকা নিট প্রিমিয়াম আয় প্রদর্শন করা হয়। অথচ একটি বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাখিল করা তথ্যে পলিসি দায় দেখানো হয়েছে ৭২ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনো অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে চাননি পদ্মা ইসলামী লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রব্বানী চৌধুরী। তবে ২০০৭ সালে বীমা অধিদফতরকে জরিমানা না দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, আদালতের আদেশে বিষয়টি স্থগিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পদ্মা ইসলামী লাইফ গত ২২ নভেম্বর আইপিও অনুমোদন পায়। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে সাবক্রিপশন শুরু হবে। প্রাথমারী মার্কেট থেকে কোম্পানিটি ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
শেয়ারনিউজ২৪
Blogger Comment
Facebook Comment