পাঁচ বছরে বাজারে আসবে ৭৫ আইপিও

পাঁচ বছরে বাজারে আসবে ৭৫ আইপিও

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ে এসইসির দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা

২০১০-১১ অর্থবছরে ১১টি কম্পানির আইপিও বাজারে আনার মাধ্যমে মূলধন বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র অর্ধেক পূরণ করতে পেরেছে সংস্থাটি, আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) আনতে পেরেছে ছয়টি কম্পানির। চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির লক্ষ্যমাত্রা ১২টি কম্পানির আইপিও বাজারে আনার। অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এ সংখ্যা আরো একটি কম্পানি বাড়ানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ছয়টি আইপিও বাজারে এসেছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর এসইসির তৈরি করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্থাটি আগামী পাঁচ বছরে ৭৫টি আইপিও আনবে। এর মধ্যে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৩টি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪টি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫টি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৬টি ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৭টি কম্পানির আইপিও বাজারে আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সংস্থাটি তাদের প্রধান কার্যক্রম ও কার্যক্রমের সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে বলেছে, সিকিউরিটিজের যথার্থ ইস্যু নিশ্চিতকরণ, সিকিউরিটিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং পুঁজি ও সিকিউরিটি বাজারের উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করা। এটি সম্ভব হলে পুঁজিবাজারে আইপিও, ডাইরেক্ট লিস্টিং, রাইট ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বা বাজার মূলধনের পরিমাণ বাড়বে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে পাঠানো এসইসির এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সনদ দেওয়া ও নবায়নের গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারেনি এসইসি। ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ৫৮৪টি বাজার মধ্যস্থতাকারীর সনদ দেওয়া ও নবায়ন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও বছর শেষে দুই হাজার ১০২টি দেওয়া ও নবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরে তিন হাজার ৩২৫টি মধ্যস্থতাকারীকে সনদ দেওয়া ও নবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ সংখ্যা ছয় হাজার ৮৮৫-এ উন্নীত করা হবে।
দ্বিতীয় প্রধান কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রচলিত বিধি-বিধানের সংস্কার ও নতুন বিধি-বিধান প্রণয়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা। এটি করা হলে পুঁজিবাজারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
বাজার মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে রয়েছে স্টক ব্রোকার, সাব ব্রোকার, শেয়ার হস্তান্তরকারী প্রতিনিধি, ইস্যুর ব্যাংকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, ইস্যুর নিবন্ধক, ইস্যুর ম্যানেজার, অবলিখক (আন্ডাররাইটার) এবং সিকিউরিটি মার্কেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে_এমন অন্যান্য মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠান। এসইসির ধারণা, এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও নবায়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজার শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য ও সম্প্রসারিত হবে।
এসইসির প্রতিবেদনে সংস্থাটির সাম্প্রতিক অর্জন সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে মোট ২৩টি কম্পানিকে আইপিও, ৪২টি কম্পানিকে রাইট ইস্যু, একটি কম্পানিকে কনভার্টেবল বন্ড ইস্যু, ছয়টি কম্পানিকে ডাইরেক্ট লিস্টিং এবং ১৯৪টি প্রাইভেট লিমিটেড ও ২২৫টি পাবলিক লিমিটেড কম্পানিকে মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি করপোরেট বন্ড, আটটি ডিবেঞ্চার এবং ২১২টি ট্রেজারি বন্ড তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বেড়েছে।
এসইসি বলছে, সব সিকিউরিটিজের ইস্যু করা মূলধনের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৩২.৮৬ শতাংশ বেড়েছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সব সিকিউরিটিজের মোট বাজার মূলধনের পরিমাণ ৫.৬৭ শতাংশ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধনের পরিমাণ ১১.৭১ শতাংশ কমেছে। গত জুন পর্যন্ত সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সব (ওটিসি বাদে) কম্পানি ডিপজিটরি ব্যবস্থার আওতায় এসেছে। ফলে ডিপজিটরি পার্টিসিপেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১৪তে। আর স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সংখ্যা ৪৫০টি থেকে বেড়ে ৪৯০টিতে দাঁড়িয়েছে।
এসইসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বাজারে চাহিদার তুলনায় ভালো শেয়ারের সরবরাহ কম। সরকারি মালিকানাধীন কম্পানি ও সংস্থাগুলোর শেয়ার দ্রুত অফলোড করার সুবিধার্থে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন দরকার। যত দ্রুত সম্ভব পুঁজিবাজারের লেনদেন নিষ্পত্তি করার স্বার্থে ক্লিয়ারিং করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা, পুঁজিবাজার সম্পর্কিত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির স্বার্থে বিশেষ আদালত গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা ও বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা।


সূত্র: কালের কণ্ঠ, ২১ ডিসেম্বর ২০১১

 

Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment