IPO News

পদ্মা ইসলামী লাইফের আইপিও আবেদনে ভূয়া তথ্যের অভিযোগ December 21, 2011


বেসরকারি জীবন বীমা কোম্পানি পদ্মা ইসলামী লাইফ প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) জন্য যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে ভূয়া লভ্যাংশ দেখানোর গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে।

গত ১৮ ডিসেম্বর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান বরাবর জীবন বীমা কর্পোরেশনের  সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ. কে. এম. মোস্তাফিজুর রহমান এ অভিযোগ উত্থাপন করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠির অনুলিপি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব এবং অর্থমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

অভিযোগকারী জীবন বীমা কর্পোরেশনের  সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. এম. মোস্তাফিজুর রহমান তার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, পদ্মা লাইফের পরিচালনা পরিষদ ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লভ্যাংশ দেখিয়ে তা তুলে নিয়েছেন।

পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আইপিও সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ২০০৮ ও ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনেও গোঁজামিল খুজে পাওয়া গেছে।

২০০৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের ১৫ পৃষ্ঠার ১৩ অনুচ্ছেদে প্রিমিয়াম আয় সংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়, কোম্পানিটির আলোচ্য বছরে ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা নিট প্রিমিয়াম আয়ের মধ্যে বকেয়া দেখানো হয়েছে ১৬ কোটি ১৮ লাখ ৭ হাজার টাকা।

অথচ ২০০৮ সালে বার্ষিক প্রতিবেদনে বকেয়ার কোনো হিসাব নেই। অভিযোগ রয়েছে ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এ কাজটি করা হয়েছে। ফলে এ বকেয়া প্রিমিয়ামের কোনো হিসাব কোম্পানিতে নেই।

এছাড়া ২০০৯ সালে কোম্পানির মোট খরচ দেখানো হয়েছে ৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকা বিবিধ খরচ দেখানো হলেও তার কোনো খাত  উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে ১১৮ কোটি টাকা নিট প্রিমিয়াম আয় দেখানো হলেও বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাখিল করা তথ্যে পলিসি সংক্রান্ত দায় দেখানো হয়েছে ৭২ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য পদ্মা ইসলামী লাইফ গত ২২ নভেম্বর আইপিও অনুমোদন পায়। এ আইপিওর সাবস্ক্রিপশন আগামী ২২ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিক বাজার থেকে এ প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।

অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ২০০৯ সালের এ্যাকচুয়ারী ভ্যাল্যুয়েশন রিপোর্টেও ব্যাপক গোঁজামিলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ভূয়া লভ্যাংশ দেখানোর বিষয়টি সাবেক বীমা অধিদফতরের তদন্ত রিপোর্টে ধরা পড়ে বলে অেিভযোগ পত্রে উল্লেখ করে সংযুক্তি হিসাব নথিও দাখিল করা হয়।

এতে বলা হয়, কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুশেন রিপোর্টে ৮ কোটি টাকার বেশি লোকসান ছিল। তা সত্বেও কোম্পানির পরিচালকগণ তাদের মূলধন ৩ কোটি টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তুলে নেয়। এ টাকা  তারা তুলে নেন ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে কোম্পানির একাধিক প্রকল্প থেকে।

পরে বিষয়টি বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মেসার্স আজিজ হালিম খায়ের অডিট ফার্মকে। অডিট রিপোর্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ২ কোটি টাকা জরিমানা করে। কিন্তু সে জরিমানা আজও পরিশোধ করা হয়নি। পরে অধুনালুপ্ত  বীমা অধিদফতরে এ বিষয়টি ধামা চাপা পড়ে যায়।

এ বিষয়ে আইডিআরএ এর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি অভিযোগ পত্র পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি যাচাই করার জন্য অভিযোগ পত্রটি একজন সদস্যকে মার্ক করা হয়েছে।



source: sharenews24.com
Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment